গিরিবাজ কবুতর চেনার উপায় ও জাত পরিচিতি

গিরিবাজ কবুতর চেনার উপায়

গিরিবাজ কবুতর চেনার উপায় ও জাত পরিচিতি। গিরিবাজ কবুতর (Tippler Pigeon) পোষা কবুতরের একটি জাত। কবুতর পালন কারীদের কাছে এটি বেশ জনপ্রীয়। এটি প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য উত্থাপিত হয়। গিরিবাজ কবুতরের জাতের সঠিক উৎস অজানা। তবে অন্যান্য কবুতরের জাতের মতো, এই জাতটিও রক কবুতর থেকে তৈরি হয়েছে যা ভূমধ্যসাগর এবং চীনের মধ্যবর্তী অঞ্চলের স্থানীয় জাত। ১৮৪৫ সালে ইংল্যান্ডে গিরবাজ কবুতর প্রথম সনাক্ত করা ও গবেষণা শুরু হয়।

গিরিবাজ জাতের কবুতর

কিছু জাতের মধ্য প্রাচ্য থেকে উদ্ভূত বলে বিশ্বাস করা হয় তবে টিপ্পলারের উত্স অনিশ্চিত। মনে করা হয় যে, টিপ্পলার কবুতর একটি ক্রস জাতের কবুতর। এ জাতের কবুতর অনেক সময় ধরে আকাসে উড়তে পারে। এবং আকাশে ডিকবাজী দেয়। গিরিবাজ কবুতর আকাশের অনেক উপরে উঠতে পারে। এরা এতে উপরে উঠতে পারে যে কখনো কখনো মেঘের উপরে ঢাকা পড়ে।

গিরিবাজ কবুতর
চিত্র- টিপ্পলার

গিরিবাজ কবুতর কামুলেট এবং হোমিং জাতের কবুতরের মধ্যে ক্রসিংয়ের ফলাফল। এই ক্রস ও বংশবৃদ্ধি পাখির সহনশীলতা উন্নত করেছে এবং আরও বহুক্ষণ উড়ানের পরিসর বৃদ্ধি পেয়েছে। দীর্ঘক্ষণ এই উড়ার ক্ষমতার তৈরি হয়েছে বাছাই করা বংশের পূর্বসূরীর থেকে।

গিরিবাজ কবুতর চেনার উপায় ও বৈশিষ্ট্য

গিরিবাজ কবুতর যারা পালন করেন অনেকেই এর বৈশিষ্ট্য চিনেন না। গিরিবাজ জাতের কবুতর চেনার আসল উপায় হচ্ছে তার চোখ। চোখই বলেদেবে সে কতটুকু ব্লাড লাইনের গিরিবাজ। অনেক কবুতর প্রেমীই চায় বেবি না করে হাট থেকে অচেনা একটি ভাল ব্লাডলাইনের গিরিবাজ সংগ্রহ করতে। ভাল ব্লাড লাইন বলতে বুঝায় যেগুলো পাল্লা বা রেসে দ্রুত ঘরে ফিরে। অথবা বিক্রি করলে ৬ মাস পর হলেও আবার ফিরে আসে। ভালো জাতের গিরিবাজ কবুতর চেনার উপায় নিম্নরূপ-

  1. আসল গিরিবাজের চোখের মনি সেকেন্ডে সেকেন্ডে ছোট এবং বড় হযতে দেখা যায়।
  2. মনির অবস্থান ভিতরের দিকে থাকে।
  3. কবুতরের পাখনা লেজ এর সমান বা লেজ এর থেকে অল্প একটু খাটো থাকে।
  4. দূর থেকে চোখের দিকে তাকালে মনে হবে চোখে পানি ভাসছে।
  5. দুই পাখা দিয়ে পায়ের রানের শেষ পর্যন্ত ঢাকা থাকবে।
  6. এজাতের কবুতরের বুক উচু থাকবে।
  7. এদের গলা খুব কম স্প্রিং করবে এবং ঘাড় লম্বা বা খাটো হতে পারে।
  8. চোখের চারদিকে কাল বা হালকা কালো রাউন্ড দেখতে পাওয়া যাবে।
  9. অনেক গিরিবাজের চোখের মনির চারদিকে নীলচে বা কাল অঞ্চল দেখা যায়।
  10. এরা উড়ার সময় বাম পাখনা কোনাকোনি এংগেলে ও ডান পাখনা পুরোটা মেলে উপর নিচে নামাবে যা দেখতে কিছুটা বাজপাখির মত মনে হবে।
  11. এরা আনেক উপরে উঠবে এবং উপরেই বেশিক্ষণ থাকবে।
গিরিবাজ কবুতর চেনার উপায় ও বৈশিষ্ট্য
চোখ দেখে গিরিবাজ কবুতর চেনার উপায়

গিরিবাজ জাতের কবুতরের দাম

সাধারনত রানিং জোড়া ৬০০ থেকে ৭০০ এবং বাচ্চা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। তবে রেস খেলায় পারদর্শি বা ভালো জাতের গিরিবাজের দাম ৫০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পাড়ে। কথায় আছে সখের দাম লাখ টাকা। কবুতরের দামের তালিকা থেকে দেখা যায় সাদা গিরিবাজ এর দাম বেশি থাকে।

পালন পদ্ধতি

দেশি কবুতরের মতই এই জাতের কবুতর পালন করা হয়। এই জাতের কবুতর পালন পদ্ধতি দেশীয় কবুতরের মত হলেও এর খাওয়া ও উড়ার ব্যাপারে বেশি যত্নশীল হতে হয়। অধিক ফ্যাট যুক্ত খাদ্য খেতে দেওয়া ঠিক না এতে কবুতরের ওজন বৃদ্ধি পায় এতে করে দীর্ঘ সময় ওড়ার খমতা কমে যায়। এই কবুতরকে প্রতিদিন অন্তত একবার আকাশে দীর্ঘ সময় উড়াতে হবে। বাড়ি থেকে দুরে নিয়ে ছেড়ে দিতে হবে।

নিয়মিত কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়াতে হবে এবং সুষম খাদ্য সবরাহ করতে হবে। এই কবুতর একটু ভিতু প্রকৃতির। ধরতে গেলে খুব ছটফট করে। তাই সাবধানে ধরতে হবে নয়তো কবুতর আহত হবে।

কবুতর যাতে ভাইরাস জনিত রোগে আক্রান্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। নিয়মিত ভ্যাকসিনেশন করতে হবে। বাহিরের পশু-পাখি থেকে বিরত রাখতে হবে।

গিরিবাজ জাতের কবুতর ছবি

গিরিবাজ কবুতরের জাত পরিচিতি, সাদা  কবুতর ও ডিগবাজি। নিচে কিছু গিরিবাজ কবুতরের ছবি আপনাদের চেনানোর জন্য দেওয়া হলো।

গিরিবাজ কবুতর

গিরিবাজ আকাশের অনেক উপরে উঠতে পারে এবং অনেক দুর পর্যন্ত যেয়ে আবার ফিরে আসতে পারে। এদের উড়তে উড়তে আকাশে ডিগবাজি দিতে দেখা যায়। অনেক সময় দুই হাত দিয়ে তালি দিলে তারা আকাসে অনেকগুরো ডিগবাজি দেয় যা বিশ্বয়কর ও আন্দদায়ক।

এই জাতের কবুতরের এই বিশেষ বৈশিষ্ট বিশ্বজুরে পাখি প্রেমিদের কাছে পেয়েছে অনন্য মাত্রা।

আরো পড়ুন- দেশি কবুতর পালন পদ্ধতি- রোগ ও চিকিৎসা

2 thoughts on “গিরিবাজ কবুতর চেনার উপায় ও জাত পরিচিতি”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *