রিপিট ব্রিডিং বা গাভী বার বার গরম হওয়া রোগ

গাভী

রিপিট ব্রিডিং বা গাভী বার বার গরম হওয়া। একটি বাণিজ্যিক ডেইরী ফর্মের প্রধান সমস্যা গুলোর মধ্যে রিপিট ব্রিডিং (Repeat Breeding) একটি অন্যতম মারাত্বক সমস্যা। গাভী বা বকনা যদি স্বাভাবিক এসট্রাস চক্রে বারবার গরম হয় এবং তিন বারের অধিক কৃত্রিম প্রজনন করা সত্ত্বেও গর্ভধারণ না করে, তখন ঐ গাভীকে রিপিট ব্রিডিং বলে। এবং এ সমস্যাকি রিপিট ব্রিডিং বা পুনঃ পুনঃ গরম হওয়া বলে।

রিপিট ব্রিডিং সিন্ড্রোম Repeat breeding syndrome (RBS), এটি দুগ্ধ গাভী গরুর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজনন ব্যাধি। এই রোগের ফলে ডেইরি শিল্পে উচ্চ অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। বাংলাদেশের নির্বাচিত অঞ্চলগুলিতে ক্রসব্রিড দুগ্ধ গাভীর পুনঃপ্রজননের কারণগুলি নির্ধারণের জন্য এই সমীক্ষা করা হয়েছিল।

রিপিট ব্রিডিং বা গাভী বার বার গরম হওয়া রোগের কারণ

  • জরায়ুতে জীবাণুর সংক্রমণের ফলে Metritis, Endometritis, Perimetritis, Perametritis ইত্যাদি হলে।
  • Estrous সঠিকভাবে নির্ণয় করতে না পারলে।
  • গাভীর গরম হওয়ার সঠিক সময়ে ও যথাস্থানে গরুর সিমেন বা বীজ দিতে না পারলে।
  • নিম্নমানের সিমেন দ্বারা প্রজনন করলে।
  • গাভী বিভিন্ন দরকারি পুষ্টির অভাবে ভুগতে থাকলে।
  • গাভীর শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও ওভারিয়ান সিস্ট থাকলে।

রিপিট ব্রিডিং রোগের লক্ষণ

  • জরায়ু থেকে নিশ্রিত মিউকাসের রং অনেক সময় খুব পাতলা ও ঘোলাটে হতে দেখা যায়।
  • ডাকে আসার সময়কাল খুব কম কিংবা অতিদীর্ঘ হতে দেখা যায়।
  • নির্দিষ্ট পিরিওডে গাভী গরম হলেও, প্রজনন করালে তা গর্ভধারণ করবে না।
রিপিট ব্রিডিং

প্রতিরোধ ও চিকিৎসা

  • প্রধমে কারণ সনাক্ত করে তার সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা করাতে হবে।
  • গাভীকে উত্তম রুপে কৃমি মুক্ত করতে হবে ও সুষম কাদ্য সরবরাহ করতে হবে।
  • কৃমিনাশক ব্যবহারের পরপরই ভালো একটি লিভার টনিক খাওয়াতে হবে।
  • সাথে ভিটামিন, মিনারেল, এমাইনো এসিড, প্রোবায়োটিক ও প্রিবায়টিক ঔষধ খাওয়াতে হবে।
  • গাভীর জরায়ুতে সংক্রমণ থাকলে একটি শক্তিশালী এন্টিবায়টিক প্রয়োগ করতে হবে।
  • প্রজননের সাথে সাথে সাধারণত গোনাডোট্রফিন রিলিজিং হরমোন (GnRH) ইনজেকশন মাংসে দেওয়া যেতে পাড়ে।

প্রতিরোধ

  • সঠিক সময়ে অর্থাৎ গরম হওয়ার ১২ ঘন্টা পরে ও ১৮ ঘন্টার মধ্যে হিটে আসা গাভীকে প্রজনন করত হবে।
  • গাভী গরম হলে দুধের প্রজেস্টেরনের মাত্রা খুব কমে যায়। গাভীর প্রজেস্টেরনের মাত্রা নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে।
  • প্রজননকারীকে সতর্কতার সঙ্গে গর্ভে বাচ্চা আছে কিনা তা নির্ণয় করে তারপর কৃত্রিম প্রজনন করাতে হবে।
  • প্রজনন করানোর সময় গাভীকে কোনো প্রকার ধকলে রাখা যাবে না। যেমন অনেক দূর পায়ে হেঁটে নিয়ে যাওয়া, খাদ্য পরিবর্তন করা, ইত্যাদি।
  • পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য দিতে হবে।
  • ভালো বীজ ও দক্ষ প্রজননকারী দ্বারা কৃত্রিম প্রজনন করাতে হবে।
  • প্রয়োজনে ২ বার প্রজনন করানো যেতে পারে।
  • প্রজনন করানোর পর ৩ সেকেন্ড গাভীর ক্লাইটোরিসে মালিশ (Massage) দিতে হবে।
  • প্রজনন করানোর পর গাভীকে ঠান্ডা জায়গায় রাখতে হবে।

মানুষের মতো প্রাণীদের মধ্যেও হরমোনাল কিছু রোগ বাড়ছে। খাবারের অভ্যাস পরিবর্তনের কারণে রোগ বাড়ছে। রবি শঙ্কর রাজপুতকে রবিবার ‘কুইজ পাহাড়’ -র প্রাণী রোগের চিকিত্সার জন্য পরামর্শের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। পাঠকরা তাঁর পশুর রোগ সম্পর্কে ফোনে পরামর্শ করেছিলেন।

আমার গাভী এক বছর ধরে গর্ভবতী হয়নি। সমস্যাটা কি?

গর্ভে সংক্রমণের সমস্যা রয়েছে। নিকটস্থ সরকারী প্রাণী হাসপাতালে স্থানান্তরিত করুন। সংক্রমণ অপসারণ করতে, একটি বড়ি তিনদিন গরুর গর্ভে রাখতে হয়।

আরো পড়ুন: গাভী গরুর ম্যাস্টাইটিস বা ওলান পাকা রোগ (Mastitis in cows)