গরুর কৃমি রোগ ও কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ানোর নিয়ম

গরুর কৃমি রোগ ও কৃমিনাশক ঔষধ

গরুর কৃমি ও কৃমিনাশক ঔষধ পরিচিতি ও আলোচনায় আপনাকে স্বাগতম। গরুর কৃমি তথা কৃমি রোগ ও এর ঔষধ সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারনা থাকা দরকার। এছাড়াও আমাদের গরুর গরজীবি সম্পর্কেও সঠিক ধারণা থাকতে হবে। গরুর কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানোর নিয়ম জানতে হবে। গরু থেকে ভালো উৎপাদন পেতে হলে অবশ্যই তাকে কৃমি মুক্ত রাখতে হবে।

গবাদিপশু শরীরে কৃমির বসবাস

ছাগল গরু তথা সকল গবাদিপশুর গোলকৃমি, পাতাকৃমি ও ফিতাকৃমির আবাস স্থল হলো-

  1. গোলকৃমি- পাকস্থলী ও অন্ত্রনালী
  2. পাতা কৃমি / কলিজা কৃমি- কলিজা
  3. ফিতা কৃমি- পাকস্থলী ও অন্ত্রনালী

গরুর কৃমি রোগের ক্ষতিকর প্রভাব

গরুর কৃমি হলো খামারের নিরব ঘাতক। এদের দেখা যায় না কিন্তু ক্ষতি করে অনেক। কৃমি গরুর উৎপাদন কমিয়ে দেয়। গরুর খাওয়া দাওয়া, হজম ও বেড়ে ওঠায় বাধা প্রদান করে। গরুকে দুর্বল ও রক্ত শুন্য বরে ফেলে। বাছুরের লিভার ড্যামেজ করে ফেলে। গাভী হিটে আসে না বা আসলেও কনসেপ্ট করে না। আমাদের দেশের বেশির ভাগ খামারি এই গরুর কৃমির ব্যাপারে উদাসিন থাকে।

গরুর খাবারের পেছনে প্রচুর টাকা খরচ করে কিন্তু গরুর কৃমির ঔষধ কিনতে আমরা আমরা কার্ডপন্য করি। অথচ আপনার টাকায় কেনা খাবারের সকল পুষ্টি এই গরুর কৃমি খেয়ে ফেলছে আপনি খেয়াল করছেন না। গরুর শরীরের আঠালি উকুন সহ কয়েকটি বহি: পরজীবি গরুর স্কিনে ক্ষত তৈরি করে ও গরুর রক্ত চুষে নেয়।

গরুর কৃমি
চিত্র- গরুর পাকস্থলির কৃমি

গরুর কৃমি বা পরজীবি

গরু তথা সকল গবাদিপশু শরীরে বিভিন্ন ধরনের পরজীবি বা কৃমি বসবাস করে। গরুর বাসস্থান ও খাদ্যাভ্যাসের কারনে গরুর শরীরে কৃমির আক্রমণ ও বিস্তার বেশি ঘটে। গরুর শরীরের পরজীবি গুলোকে প্রধানত ২ ভাগে ভাগ করা হয়। যথা- ১. অন্তঃ পরজীবি, ২. বহিঃ পরজীবি।

গরুর অন্তঃ পরজীবি

গরুর শরীরের অভ্যন্তরে যে সকল কৃমি বা পরজীবি বসবসা করে তাদেরকে অন্তঃ পরজীবি বলে। গরুর পেট বা রুমেনে, গরুর লিভারে, গরুর চোখে ইত্যাদি জায়গায় বিভিন্ন রকমের কৃমি পাওয়া যায়। গরুর অন্তঃ পরজীবি তুলনামুলক বেশি ক্ষতি সাধিত করে।

গরুর বহিঃ পরজীবি

গরুর শরীরের বাইরের অংশে তথা চামরার উপরে কিছু পরজীবি বসবাস করতে দেখা যায় এদের কে বহিঃ পরজীবি বলে। এদের মধ্যে উকুন বা আঠালী অন্যতম। বহিঃ পরজীবি নানাভাবে গরুর ক্ষতি করে। রক্ত চুষে খায় ও গরুর বিভিন্ন স্কিন ডিজিস তৈরি করে। গরুর বহিঃ পরজীবি তুলনামুলক কম ক্ষতি করলেও এটিকে দমন করতে হবে।

গরুর কৃমির লক্ষণ

গরু অধিক পরিমানে কৃমিতে আক্রমণ করলে গরুর শরীরে বিভিন্ম লক্ষ্মণ প্রকাশ পায়। গরুর শারীরিক বৃদ্ধি তথা সকল উৎপাদন কমে যায়। গরুর অরুচি থেকে শুরু করে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা তৈরি করে। গরুর কৃমির লক্ষণ গুলো নিম্নরূপ-

  1. গরুর খাবারে অরুচি থাকে।
  2. ঘন ঘন পেট ফাঁপা বদহজম দেখা দেয়।
  3. গোবর শক্ত না হওয়া বা নরম পায়খানা করা।
  4. গরুর শরীরে রক্ত কমে গরু দুর্বল হয়ে যাওয়া।
  5. গরুর স্বাস্থ্যের উন্নতি না হওয়া।
  6. গাভী গরু হিটে না আশা।
  7. গাভী গরু বীজ কনসেপ্ট না করা। ইত্যাদি

গরুর কৃমি রোগ

গরুর কৃমি রোগ আমাদের দেশের একটি অতি পরিচিত রোগ। গরুর কৃমি রোগের মধ্যে অন্যতম হলো – কলিজা কৃমি রোগ বা ফ্যাসিওলিয়াসিস, প্যারামফিস্টোমিয়াসিস, গোলকৃমি বা নেমাটোডিয়াসিস ইত্যাদি।

নিম্নে এগুলো সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারনা তুলে ধরা হলো। এই কৃমি রোগ বাচুর বা অল্প বয়স্ক গরুর বেশি ক্ষতি করে। আর তাই জন্মের পর থেকেই বাছুর কে প্রথম বার সিরাপের মাধ্যমে কুমি মুক্ত করতে হবে। কেননা বাছুর পেটে কৃমি নিয়েই জন্ম নেয়।

গরুর কলিজা কৃমি রোগ (Fascioliasis)

গরুর কলিজা কৃমি সবচেয়ে ক্ষতিকর একটি পরজীবী। এটি লিভার বা কলিজাকে নষ্ট করে দিতে থাকে যার ফলে লিভারের কার্কারিতা কমে যায় এতে গরুর ইৎপাদন কমে যায়। বাছুরের ক্ষেত্রে দ্রুত মারা যায়।

রোগের প্রচলিত নাম

গরুর কলিজা কৃমির কতিপয় প্রচলিত নাম রয়েছে। এগুলো হলো- ফ্যাসিওলিয়াসিস, কলিজা চাটুয়া, কলিজা পঁচা ইত্যাদি। গরুর কলিজা কৃমি কলো গরুর জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর ও বিপদজনক। বাছুর অধীক পরিমানে হলিজা কৃমিতে আক্রান্ত হলে বাছুর কে বাচান প্রায় অসম্ভব হয়ে পরে। পতি বছর প্রচুর বাছুর এই কলিজা কুমির আক্রমনে মারা যায়। আর তাই খামারিকে সচেতন হতে হবে এবং সঠিক পদ্ধতিতে গরুকে হলিজা কৃমি মুক্ত করতে হবে।

রোগের কারণ

ফ্যাসিওলা জাইগেনটিকা ও ফ্যাসিওলা হেপাটিকা নামক দুইটি কৃমির কারনে এই রোগ হয়। বাংলাদেশেে সাধারণত ফ্যাসিওলা জাইগেনটিকা দ্বারা কলিজা কৃমি রোগ হয়ে থাকে।

গবাদিপশুর চোখের কৃমি

গবাদিপশুর পাকস্থলির কৃমি বা কলিজা কৃমি খুবই সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু গরুর চোখের কৃমি সম্পর্কে আমাদের ধরনা খুবই সামান্য। এটি একটি গরুর মারাত্মক পরজীবী ঘটিত রোগ। গরুর চোখের পাতার নিচে এই কৃমি কিলবিল করে বেড়ায়। এই কৃমির খাদ্যও মূলত রক্ত। গরু এই পরজীবীতে আক্রান্ত হলে চোখ দিয়ে পানি ঝরতে দেখা যায়।

সাধারণত থেলাজিয়া এসপিপি (Thelagea spp) নামক পরজীবীর আক্রমনে এই রোগ হয়। গরুর চোখের কৃমি ২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়, দেখতে পাতলা এবং সাদা। এক বা উভয় চোখ আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত গরুর একটি চোখে সর্বোচ্চ ৯০টি পর্যন্ত এই পরজীবী পাওয়া যাওয়ার রেকর্ড আছে। মাছি বা ডাস থেকে গবাদিপশু এই পরজীবী তে আক্রান্ত হয়। গরম কালে মাছির বিস্তার বেশি হলে রোগের প্রকপ বৃদ্ধি পায়।

গরু আক্রান্ত হলে বোরিক পাউডার পানিতে মিশিয়ে চোখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হয়। পরবর্তীতে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ রোধে সিপলক্স-ডি (সিপ্রোফ্লোক্সাকসিন এবং ডেক্সামেথসোন) নামক ঔষধ প্রতি ৫ ঘণ্টা পর পর চোখে ৫ ফোঁটা করে দেয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তার। এছাড়া আইভারমেকটিন ইনজেকশন ০.২ মি.গ্রা / কেজি অনুসারে প্রয়োগ করতে হয়। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই ধাপগুলে সঠিকভাবে অনুসরণ করতে পারলে গবাদিপশুর চোখের কৃষি সহজেই মুক্ত করা যায়।

গরুর চোখের কৃমি
চিত্র- গরুর চোখের কৃমি

কৃমি আক্রান্ত হওয়ার লক্ষন

  • পশুটির স্বাস্থ্য শুকিয়ে যায় ও দূর্বল হয়ে পড়ে।
  • প্রচুর খাবার খেয়েও স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে না।
  • উৎপাদন ক্ষমতা ও কাজ করার ক্ষমতা ক্রমান্বয়ে কমে যেতে থাকে।
  • লোম উসকো খুশকো হয়ে যায়।
  • পায়খানা দূর্গন্ধন যুক্ত ও পাতলা হয় এবং মাঝে মাঝে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।
  • কোন কোন সময় গলার নীচে পানি জমে ফুলে উঠে।
  • পেট মোটা ও বড় দেখায়।
  • রক্ত স্বল্পতা দেখা যায়।
  • গাভী গরু হীটে আসে না।

গরুর কৃমিনাশক ঔষধ

গরু তথা সকল গবাদি পশু-পাখির কৃমিনাশক মুলত চারটি ফরমেটে পাওয়া যায়। ট্যাবলেট বা বোলাস, পাওডার, ওরাল সলুশন বা সিরাপ ও ইনজেকশন। গরু বা ছাগলের জন্য ট্যাবলেট বা বোলাস ও ইনজেকশন পদ্ধতি জনপ্রিয়।

কৃমিনাশকঔষধ
ট্যাবলেট/বোলাসএলবেনডাজল, ট্রাইক্লাবেনডাজল + লিভামিসল
ইনজেকশন নাইট্রক্সিনিল, আইভারমেকটিন, লিভামিসল
ওরাল সলুসন/সিরাপআইভারমেকটিন ১% সলুসন
পাওডারপাইপারজিন
(গরুর কৃমিনাশক সমূহ)

গবাদিপশুকে নিয়মিত কৃমি মুক্ত ঔষুধ দিতে হবে। যেদিন ঔষুধ দিবেন তারপরের দিন সকালে লিভার টনিক আর বিকালে ক্যালসিয়াম খাওয়ালো ভালো হয়। উন্নত মানের লিভার টনিক ৫-৭ দিন দিতে হবে। তারপর ক্যালসিয়াম, জিংক, ভিটামিন এ,ডি, থ্রী বা ডিবি পাওডার খাওয়াতে হবে।

গরুর কলিজা কৃমির ইনজেকশন

গরুর কলিজা কৃমির জন্য সবচেয়ে কার্যকারি হলো নাইট্রক্সিনিল গ্রুপের ইনজেকশন। যেমন- নাইট্রোনেক্স ইনজেকশন (রেনাটা), নাইট্রক্সিনিল ইনজেকশন (এসিআই)। গ্রাম্য পশু ডাক্তারেরা আইভারমেকটিন ইনজেকশন কলিজা কৃমির জন্য ব্যবহার করে। এটা আমার কাছে সঠিক মনে হয় না। কেননা আইভারমেকটিন সকল অন্ত:ও বহি: পরজীবীর বিরুদ্ধে কাজ করে। শুধু কলিজা কৃমির জন্য স্পেসিফিক ড্রাগ এটি না।

গরু বা ছাগলের বহী: পরজীবীর জন্য আইভারমেকটিন একটি ভালো ঔষধ। এটি পরজীবীর প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। আর প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট হলে পরজীবী বংশ বিস্তার করতে পারে না ফলে পরজীবী একটি নির্দিষ্ট সময় পর এমনিতেই মারা যায়।

পরজীবী যাতে দ্বিতীয় বার বংশ বিস্তার না করতে পারে তার জন্য ১৪ দিনের মধ্য আরেক ডোজ আইভারমেকটিন ঔষধ প্রয়োগ করতে হয়।

গরুর কৃমির ট্যাবলেট

বাজারে প্রায় সকল ফার্মাসিক্যাল কম্পানিরই কৃমিনাশক ট্যাবলেট পাওয়া যায়। বাজারে দুইটি গ্রুপের ট্যাবলেট পাওয়া যায়। যথাঃ এলবেনডাজন এবং ট্রাইক্লাবেনডাজল + লিভামেসল।

  1. ইনডেক্স বোলাস (এলানকো)
  2. এলটি-ভেট বোলাস (একমি)
  3. রেনাডেক্স ভেট বোলাস (রেনাটা)
  4. এন্টিওয়ার্ম ভেট বোলাস (এসিআই)

ইত্যাদি নামে বাজারে পাওয়া যায়।

গরুর কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ানোর নিয়ম

গরুকে কৃমির ঔষধ বা ট্যাবলেট খাওয়ানোর সময় যেসব নিয়ম মানা জরুরী সেগুলো আমাদের দেশের অনেক গরুর খামারিই জানেন না। গরু খামারে যে বিষয় টি নিয়ে বেশি ঝামেলায় পড়তে হয় সেটি হল গরুর বিভিন্ন রোগ বা অসুস্থতা। আর গরুর রোগ সমুহের মধ্যে অন্যতম হল পরজীবী তথা কৃমি রোগ। গরুর কৃমি হলে ওষুধ প্রদানের সময়ে যা মেনে চলতে হবে তা নিচে দেওয়া হল-

সকালে খালি পেটে কৃমির ওষুধ খাওয়ালে সবচেয়ে ভাল হয়। সকালে গরুকে কৃমির ওষুধ খাওয়ালে তা বেশি কার্যকর হয়। গরুকে কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ানোর সময় ট্যাবলেট টি গুড়া করে চিটাগুড় বা গুড়ের সাথে মাখিয়ে অথবা কলার পাতার সাথে মুড়িয়ে খালি পেটে খাওয়াতে হবে।

গরুকে কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ানোর পর কমপক্ষে ১ ঘন্টা কোন ধরনের খাদ্য প্রদান না করলে ভালো হয়। গরুকে কোনভাবেই দানাদার খাদ্যের সাথে কৃমির ওষুধ খাওয়ানো যাবে না। গরুকে দানাদার খাদ্যের সাথে পানি মিশিয়ে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ালে ঔষধ তেমন কোন কাজ করে না। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ডোজে কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ানো ঠিক নয়। যদিও কৃমিনাশক ট্যাবলেট নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমান খাওয়ালেও গরুর তেমন কোন ক্ষতি হয় না।

গর্ভবতী গাভী বাচ্চা প্রদানের কমপক্ষে ৪৫ দিন পর কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে। কোনভাবেই মাত্রার চেয়েও কম পরিমানে বা ডোজে কৃমির ওষুধ খাওয়ানো যাবে না। মাত্রার চেয়ে কম খাওয়ালে কৃমি না মরে গিয়ে আরও বেশি করে আক্রমন করবে। গর্ভবতী গাভীকে কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ানোর সময় অনশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। গর্ভধারনের আট মাসের উপর গর্ভবতী গাভীকে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো উচিত নয়। গরুকে প্রত্যেক দুই- তিন মাস পর পর কৃমির ট্যাবলেট বা ঔষধ খাওয়াতে হবে।

গরুর কৃমি রোগ
চিত্র- গরুর কৃমি রোগ

কৃমিনাশকের সাথে লিভার টনিকের সম্পর্ক

গরুর কৃমি মুক্তকরণের সাথে লিভার টনিকের একটি সম্পর্ক রয়েছে। কখনো কখনো গরুকে কৃমি মুক্ত করণের আগে এবং সবসময় গরুকে কৃমি মুক্ত করনের পরে লিভার টনিক ব্যবহার করলে গরু থেকে ভালো উৎপাদন পাওয়া যায়। গরুকে ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র বা ইউএমএস খাওয়ানোর আগে অবশ্যই কৃমিমুক্ত করণ করতে হবে।

প্রতিরোধ

  1. খুব সকালে বা বিকালে মাঠে গরুকে ঘাস না খাওয়ানো।
  2. ময়লা ও স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় পশু না চরানো।
  3. গবাদিপশু পালন ঘর শুষ্ক রাখা।
  4. খুব বেশি রসালো ঘাস ছাগল গরুকে না খাওয়ানো।
  5. নীচু জায়গা ও জলভূমিতে পশুকে না চরনো।
  6. গোবর ও ময়লা মিশ্রিত খড়, দানাদার খাদ্য ও ঘাস না খাওয়ানো।
  7. পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে পালন করা।

গরুকে কৃমির ঔষধ খাওয়ানোর কিছু সাধারন নিয়মাবলী

গরুকে কৃমির ঔষধ খাওয়ানোর কিছু সাধারন নিয়মাবলী: আহামরি কোন নিয়ম নেই! ‍যা নিয়ম আছে তা আপনারা জানেনই।

  1. কৃমির ঔষধ সকালে খালি পেটে খাওয়ালে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়।
  2. অত্যন্ত গরমের সময় না খাওয়ানোই ভাল। যদি খাওয়াতেই হয় তাহলে খাওয়ানোর সাথে সাথে গরুকে ১০/১৫ মিনিটের মত সময় ধরে ভালোভাবে গোসল করাতে হবে ও ফ্যানের নিচে বা ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে।
  3. দানাদার খাবারের পানির সাথে কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ালে ভালো কাজ করবে না।
  4. ট্যাবলেট গুড়া করে চিটাগুড় বা কলার পাতার সাথে মুড়িয়ে খালি পেটে খাওয়ান যেতে পারে।
  5. কৃমির ঔষধ খাওয়ানোর পর কমপক্ষে ১ ঘন্টা কোন ধরনের খাবার দেয়া উচিৎ না।
  6. কৃমিনাশক ঔষধ নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমান খাওয়ালেও কোন ক্ষতি হয় না।
  7. মাত্রার চেয়ে কম খাওয়ালে কৃমিতো মরবেই না বরং আরও সক্রিয় হয়।
  8. গাভীর বাচ্চা দেয়ার কমপক্ষে ৪৫ দিন পর কৃমিনাশক ব্যবহার করুন এবং এর আগে না।
  9. আট মাসের উপর গর্ভবতী গাভীকে কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ান গেলেও উচিত নয়।
  10. নিয়মিত ৩ মাস পর পর সকল গরুকে কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়াতে হবে।
  11. সদ্য ভুমিষ্ঠ গরুর বাচ্চাকে জন্মের ৫/৭ দিনের মধ্যে পাইপারজিন গ্রুপের কৃমিনাশক পাউডার খাওয়াতে হবে। এবং ৬ মাস বয়স পর্যন্ত প্রতি মাসে ১টি করে অ্যালবেন্ডাজল গ্রুপের ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে।
  12. প্রতিবার কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ানোর পর অবশ্যই মাত্রানুযায়ী লিভার টনিক খাওয়াতে হবে। কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ানোর পর যদি খাওয়ার রুচি কম হয় তাহলে রুচিবর্ধক পাউডার/ট্যাবলেট খাওয়ালে দ্রুত রুচি ফিরে আসে।

আরো পড়ুন- গরুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি