ডাক ফিড (গ্রোয়ার) ফরমুলেশন নং-1 ও হাঁসের খাদ্য তালিকা

ডাক ফিড (গ্রোয়ার) ফরমুলেশন

ডাক ফিড (গ্রোয়ার) ফরমুলেশন ও হাঁসের খাদ্য তালিকা। হাঁসের সুষম খাদ্য তৈরির পূর্বে প্রতিটি হাঁস পালনকারীকে খোয়াল রাখতে হবে যেন সুষম খাদ্যের প্রতিটি উপাদানই সহজলভ্য, সস্তা, টাটকা এবং পুষ্টিমান সঠিকভাবে বিদ্যমান থাকে। কোনো অবস্হাতেই বাসি পঁচা বা নিম্নমানের ফাংগাসযুক্ত খাবার হাঁসকে দেয়া যাবে না।

খাদ্যের প্রকৃতি, মিশ্রণ পদ্ধতি, হাঁসের জাত, ওজন, ডিম উৎপাদনের হার এবং সর্বোপরি শামুক, ঝিনুক, ধান, সবুজ শেওলা বা শৈবাল এবং শাকসবজীর প্রাপ্যতা অনুসারে খাদ্য খাওয়ানোর কর্মসূচি তৈরি করতে হবে। এই ডাক ফিড ফরমুলেশন টি আপনার জন্য একটি উদাহরণ হতে পারে।

হাঁসের খাদ্য তৈরির উপকরণ

কার্বহায়ড্রেট এর উৎস্য হিনাবে গম বা ভুট্টা ব্যবহার করতে হবে। প্রোটিনের উৎস্য হিসেবে তিলের খৈল সবচেয়ে ভালো। কেননা এতে প্রচুর অর্গানিক ক্যালসিয়াম থাকে। এছাড়াও তিলের খৈল নানা ভাবে হাসের উপকারে আসে। তিলের খৈল না পাওয়া গেলে সয়াবিন খৈল বা সয়াবিন মিল ব্যবহার করা যেতে পাড়ে।

প্রয়োজনীন প্রোটিন, ফ্যাট ও ফাইবার এর জন্য অটোমেটিক রাইচ ব্রাণ ব্যবহার করতে হবে। এতে ১৪% এর মত ফ্যাট, ১২ % প্রোটিন ও প্রায় ৯% ডাইজেস্টেবল ফাইবার পাওয়া যায়।

হাঁসের খাদ্যে ৫-১০% প্রানীজ প্রোটিন যেমন ফিসমিল বা ফিস প্রোটিন ব্যবহার করলে খুব ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। প্রো্য হিসেবে খেসারি ডাল বা ভুসি ১৫-২০% হারে ব্যবহার করা যেতে পারে।

ডাক ফিড

ডাক ফিড (গ্রোয়ার) ফরমুলেশন বা ও হাঁসের খাদ্য তালিকা

নংখাদ্য উপাদানপরিমানমেটাবলিক এনার্জিপ্রোটিনফ্যাটফাইবার
০১ভুট্টা ৩৫১১৬২৩.১২১.৩৩০.৭৭
০২রাইচ পলিশ২০৫৭০২.৪২.৪১.২৪
০৩সয়াবিন মিল২৩৫১৮১০০.২৫১.৭৯
০৪গম১৩৩৭৭১.৭৩০.৩৩০.৩৯
০৫প্রোটিন মিল ৬০%১৬২২.৭৫০.৫১.০৫
০৬লাইমস্টোন
০৭ডিসিপি০.৫
০৮রেনা গ্রোয়ার০.৩
০৯লবন০.৩
১০মিথিওনিন০.১৪.৫০.১২
১১লাইসিন০.১০.০৬
১২টক্সিন বাইন্ডার০.২
১৩এনজাইম০.০৫
১৪প্রোবায়োটিকস০.০৫
মোট-১০১২৭৯৮২০.২৪.৮১৫.২৪
টেবিল- ডাক ফিড (গ্রোয়ার) ফরমুলেশন।

হাঁসের গ্রোয়ার খাদ্যের পষ্টিগুণ

হাঁসের গ্রোয়ার খাদ্য বা ডাক গ্রোয়ার ফিড তৈরির সময় ও হাঁসের খাদ্য তালিকায় নিম্নোক্ত পুষ্টিগুণ বিবেচনা করতে হবে।

  • প্রোটিন- ১৭% মিনিমাম
  • ফ্যাট- ৫% ম্যাক্সিমাম
  • ফাইবার- ৫ % সর্বোচ্চ
  • ক্যালসিয়াম- ১% মিনিমাম
  • মেটাবলিক এনার্জি- ২৮৫০ কিলো-ক্যালোরী/কেজি

ডাক ফিড ম্যানেজমেন্ট

প্রীয় হাাঁস খামারি ভাই, আমরা সকলেই যানি যে পারিবারিকভাবে পালিত দেশী হাঁস জলাশয়ে এবং ক্ষেতখামারে চরে জীবন ধারন করতে পারে। কিন্তু উন্নত জাতের হাঁস পালনের ক্ষেত্রে খাদ্য ব্যবস্থাপনার উপর বেশী বিশেষ যত্নবান হতে হবে।

পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রাকৃতিক খাবার যেমন – শামুক, ঝিনুক, কাঁকড়া, কেঁচো, শাপলা, ক্ষুদেপানা ছোট মাছ ও নানা ধরনের কীটপতঙ্গ মুক্ত অবস্হায় জলাশয়ে পাওয়া গেলে শুধু সকাল ও বিকালে পরিমিত পরিমান দানাদার খাবার বা ডাক ফিড সরবরাহ করলেই চলবে।

হাঁসের খাবারের সাথে প্রচুর পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হয়। হাঁসকে শুস্ক ভাবে খেতে দেওয়া ঠিক নয়। এদের সবসময় ভেজা ও গুঁড়ো খাদ্য দেয়া উচিত।

সাবধানতা

খাদ্য তৈরির উপকরণ বা ইনগ্রিডিয়েন্ট গুলো অবশ্যই টাটকা ও ধুলো বালি মুক্ত হতে হবে। ডাক ফিড (গ্রোয়ার) খাদ্য তৈরি করার পর সর্বোচ্চ ২ মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। আর তাই দেড় থেকে দুই মাসের বেশি খাদ্য তৈরি করা যাবে না। খাদ্য তৈরি করার পর তা ভালো ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।

ঈদুর বা অন্যান্য পোকামাকড় যেন ফিড নষ্ট করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। হাঁসের খাদ্য তালিকা অনুযায়ী খাদ্য তৈরি করা যেতে পারে।

আরো পড়ুন- খাসি ছাগলের খাদ্য তালিকা তৈরি ও ব্যবস্থাপণা