টবে জবা ফুল যেভাবে করতে হয়

টবে জবা ফুল

জবা একটি গন্ধ বিহীন, সুন্দর ও আকর্ষণীয় ফুল। জবা ফুল দেখতে গোলাপি, সাদা, লাল, হলুদ সহ নানান বৈচিত্রময় বর্ণের হয়ে থাকে। বাংলাদেশের সর্বত্রই এদের দেখা যায়। শোভাবর্ধনকারী উদ্ভিদ হিসেবে বাড়ির আঙিনা কিংবা বাড়ির ছাদে জবা ফুলগাছ দেখতে বাহারি ও আকর্শনীয়।  মালভেসি গোত্রের অন্তর্গত চিরসবুজ পুষ্পধারী গুল্ম এটি। রক্তজবা, জবা, জবা কুসুম ইত্যাদি নামে এটি পরিচিত।

ইংরেজি: Chinese hibiscus, বা China rose

জবা ফুলগাছ   

 1 থেকে 3 মিটার উঁচু চিরসবুজ গুল্ম, পাতার কিনারা কাটা কাটা, ফুল বড় বড় সিঙ্গেল ও ডাবল পাতার। ফুলের কুঁড়ি আসে ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলে জবা ফুল জনপ্রিয় একটি ফুল। আজকাল জবার সিঙ্গেল সেমি ডাবল ও ডাবল ফুলের সংখ্যা প্রজাতি উদ্ভাবিত হয়েছে। তাদের রঙের বৈচিত্র্য সীমাহীন। বীজ থেকে চারা তৈরি করলে ফুল ভিন্ন রং ও আকার আকৃতির হয়ে থাকে। তাই বীজের চারা থেকে প্রতিবছর অনেক নতুন প্রজাতি তৈরি করে বাজারে ছাড়া হচ্ছে। দক্ষিণ বাংলাদেশের জবার যথেষ্ট বীজ তৈরি করা হয়ে থাকে।

জবার প্রজাতি

জবার অন্য একটি সাধারণ প্রজাতি হচ্ছে হিবিস্কাস। ফুল অত্যন্ত সৌন্দর্য্যপূর্ণ লম্বা ও সরু বোটা সহ ফুল নিচের দিকে ঝুলে থাকে। পাপড়ি গভীরভাবে কাটা কাটা ও বেঁকে প্রায় বোটা স্পর্শ করে। উচ্চতা 3 মিটার হলেও হবে। এই প্রজাতির ফুলের চাষ করা যায়। কাটিং অথবা গুটি কলমের চারা তৈরি করা হয়।

টবে জবা ফুল

টবে চাষ খুব বেশি জনপ্রিয় না হলেও টবে জবা ভালোই হয়ে থাকে। কয়েকটি প্রজাতি আছে যেগুলি কেবল টবেই হয়। 25 সেন্টিমিটার টবে সার মাটি দিয়ে বছরের যে কোন সময় চারা লাগানো যায়। বছরে একবার চাপান সার ও প্রয়োজনবোধে তিন থেকে চার বার তরল সার প্রয়োগ করতে হয়। প্রতিবছর ডাল ছাঁটাই করার প্রয়োজন হয়। না বর্ষার শুরুতে বা শরৎকালের ডাল ছাড়া যায়।

গাছের রোগ ও পোকার আক্রমণ

গাছের রোগ পোকার আক্রমণ সাধারণতঃ কম হয়ে থাকে। পাতা কোকড়ানো ভাইরাস, কুড়ি অকালে ঝরে যাওয়া এগুলো ভালো ফুল পাওয়ার পক্ষে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় কখনো কখনো। তবে সব প্রজাতির বেলায় এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয় না। ভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে নিয়মিত কীটনাশক ওষুধ ছিটানো দরকার। ঔষধ ছিটিয়ে গাছের কুড়ি ঝরা সমস্যা দূর করা যায়।

জবা ফুলের উপকারিতা

  1. চোখ ওঠা সমস্যায় এর পাতার প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যায়।
  2. সর্দি ও কাশিতে জবা ফুলর রস সুস্থ হযতে সাহায্য করে।
  3. চুলের যত্ন ও বৃদ্ধির জন্য পাতার রস তেলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
  4. ডাইবেটিকস, টাক পড়া রোগ সহ আরো অনেক রোগে ব্যবহার করা হয়।
  5. গরুর গর্ভফুল আটকে গেলে ২-৩ কেজি লাল শাক ও ২-৩ টি জবা ফুল বেটে বা ব্লিন্ড করে গরুকে খাওয়ালে গর্ভফুল পড়ে যায় বলে যানা যায়।

টবে বা ছাদ বাগনে জবা না থাকলে বাগান বা বাড়ি যেন মানায় না। এটি আপনার ছাদ কৃষি বা ফুলের বাগনকে আকর্ষনীয় করে তোলে।

আরো পড়ুন: টবে চায়না কমলা চাষ পদ্ধতি