লেয়ার মুরগির খাদ্য খাওয়ানোর নিয়ম

লেয়ার মুরগি পালন

লেয়ার মুরগির খাদ্য খাওয়ানোর নিয়ম অধিকাংশ খামারে ঠিক নেই। দেখা যায় খামারিরা দিনের যে কোন সময়ে ২-৪ বার সম পরিমাণ খাদ্য দিয়ে থাকে। এতে ৩০ সপ্তাহের পরে মুরগির ওজন বেড়ে যায় এবং আশানুরুপ ডিম উৎপাদন পাওয়া যায়না।

এর প্রধান কারণ হলো- সকালে বেশী খাদ্য দিলে মুরগির শরীরে ফ্যাট ডিপোজিশন বেশী হয় এবং ডিম উৎপাদন কমে হয়। দুপুরে খাদ্য দেওয়ায় লুস মোশন বা ইন্ডাইজেশন বেড়ে যায়, বিশেষ করে গরম আবহাওয়ায়। বিকেলে খাদ্য কম খাওয়ালে রাতে ডিম উৎপাদন এর জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি মুরগি পায় না।

মুরগির বডি মেইনটেইন এর জন্য সকালে ৪০% খাদ্য দেওয়া প্রয়োজন। বয়সভেদে একটি স্বাভাবিক ডিম এর ওজন যেহেতু ৫৬-৬২ গ্রাম, তাই ৬০% খাদ্যের প্রয়োজন হয় বিকেলে। সকালে ৪০% ও বিকলে ৬০% খাদ্য দিলে দেখা যায় ৫- ১০% ডিম উৎপাদন বাড়ে। এতে অতিরিক্ত ওজনের মুরগির ওজন কমে ও কম ওজনের মুরগির ওজন বাড়ে। ডিমের অতিরিক্ত ওজন কমে স্বাভাবিক এ চলে আসে। লুস মোশন এবং ইন্ডাইজেশন কম হয়ে। খাদ্য গ্রহণ বাড়ে এবং ঔষধ খরচ কম হয়।

খাদ্য গ্রহণে আবহাওয়া ও তাপমাত্রার প্রভাব

স্বাভাবিক ভাবেই আবহাওয়া বা তাপমাত্রা মুরগির খাদ্য খাওয়ার পরিমাণের উপর প্রভাব বিস্তার করে। দেখা যায় ৭০ ফা. (২১.১ সে.) তাপমাত্রায় বিভিন্ন বয়সের মুরগি স্বাভাবিক মাত্রায় খাদ্য খায়।

লেয়ার মুরগির খাদ্য খাওয়ানোর নিয়ম

কিন্তু তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে খাদ্য খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়, রক্তে কার্বন-ডাই-অক্সাইড কমে যায়, বিপাকীয় কার্যক্রম কমে যায়, পানি পিপাসা বৃদ্ধি পায়, ডিমের খোসা পাতলা হয়।

খামারের পরিবেশের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সাথে সাথে মুরগির দেহের তাপ অপসারণ প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পায় ফলে দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ঠিক রাখার জন্য বিপাকীয় কার্যক্রম বা হজম বেড়ে যায়। ফলে মুরগি খাদ্য বেশি খায় এতে খাদ্যের পুষ্টি উপাদান গ্রহণের পরিমাণও কম-বেশি হয়।

লেয়ার মুরগির খাদ্য খাওয়ানোর নিয়ম

  1. লেয়ার মুরগিকে দিনের মধ্যে ঠান্ডা সময়ে খাদ্য দিতে হবে।
  2. দিনের খাদ্যকে দুই বা তিন ভাগে ভাগ করে সকালে ও বিকালে অথবা সকালে, দুপুরে ও বিকালে দেওয়া য়ায়। তবে প্রচন্ড গরমের সময় দুপুরে খাদ্য প্রদান কর্মসূচী বাতিল করতে হবে।
  3. ডিম পাড়তে শুরু করলে মুরগিকে প্রয়োজনমত খাদ্য খেতে দিতে হবে। এই সময়ে কোন প্রকার খাদ্য কম বা বেশি করা যাবে না।
  4. ডিম পাড়ার বয়সের পূর্বে বা ডিম পাড়তে শুরু করলে মুরগির ওজন নির্ধারিত পারিমাণের বেশি থাকলে খাদ্য খাওয়া কমিয়ে ওজন কমানো যাবে না।
  5. ‍মুরগি ডিম পাড়তে শুরু করার ১০ দিন আগে খাদ্যের সাথে শতকরা ২ ভাগ হারে ঝিনুক চূর্ণ অথবা ডাই-ক্যালসিয়াম ফসফেট যোগ করলে ডিম উৎপাদন ভালো পাওয়া যায়।
  6. মুরগি ডিমে আসার আগে ওজন কম থাকলে ওজন স্বাভাবিক আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

আরো পড়ুন: টাইগার মুরগি পালন (tiger murgi palon) পদ্ধতি