জার্মান ঘাস চাষ পদ্ধতি ও পুষ্টিগুণ

Mishkat Agriculture

জার্মান ঘাস চাষ পদ্ধতি খুবই সহজ এবং এর পুুষ্টিগুণ খুবই উন্নত। জার্মন ঘাস অনেকটা লতা জাতীয় ঘাসের মত দেখতে। এই ঘাস উঁচু, নিচু, ঢালু, জলাবদ্ধ, স্যাঁতস্যাঁতে এবং ফসল হয় না এমন জমিতেও চাষ করা যায়। গোবর সার বা গোয়াল ঘর পরিষ্কার করা পানি দিয়ে জার্মান ঘাস চাষ পদ্ধতি বেশ জনপ্রীয়। এই পদ্ধতিতে কোন সারের প্র্রয়োজন হয় না।

জার্মান ঘাস পরিচিতি

এটিও নেপিয়ার ঘাসের মত বহু বর্ষজীবী ঘাস। একবার রোপন করলে ৮-১০ বছর একটানা ঘাস পাওয়া যায়। এই ঘাসের উৎপাদন খরচ খুবই কম। ছাগল, ভেড়া, মহিষ, গরু সহ সকল তৃণ ভোজি প্রাণির জন্য এই ঘাস খুবই উৎকৃষ্ট মানের।

এই ঘাস পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে পরিচিত। অস্ট্রেলিয়া ও পানামা দেশে এটি জার্মান ঘাস নামে পরিচিত হলেও উত্তর আমেরিকা তে এটিকে রিভার গ্রাস বলে। ইংল্যান্ডে এটি কে ওয়াটার বার্মুুডা বলে। স্পেনে বলা হয় পাঁজা পেলু সোহা।

জার্মান ঘাসের পুষ্টিগুণ

শুষ্ক পদার্থ বা ড্রাই মেটার২৫০ গ্রাম/কেজি
জৈব পদার্থ ২৪০ গ্রাম/কেজি
প্রোটিন ১৮ গ্রাম/কেজি
বিপাকীয় শক্তি ২.৫ মেগাজুল/কেজি
ফাইবার ৩৬%

জার্মান ঘাসের কাটিং

এই ঘাসের আবাদের জন্য কাটিং সংগ্রহ করে লাগাতে হয়। যে সকল খামারি এটি চাষ করে তাদের থেকে সংগ্রহ করতে হয়। এর কাটিং ১-২ টাকা পিচ দামে কিনতেও পাওয়া যায়। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকেও জার্মান ঘাসের কাটিং সংগ্রহ করতে পারা যায়।

জার্মান ঘাস

জার্মান ঘাস চাষ পদ্ধতি

প্রচলিত পদ্ধতিতে ভালো করে জমি চাষ দিয়ে ২৫ সে.মি. দুরত্বে একটি করে কাটিং লাগাতে হয়। ভালো ফলন পেতে সারি থেকে সারির দুরত্ব রাখতে হবে ৫০ সে.মি.। পড়ে থাকা জমি ও হালকা ছায়া যুক্ত জমিতেও এই ঘাসের ভালো ফলন পাওয়া যায়। জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে জমি প্রস্তুত করে নেপিয়ার ঘাস চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

সার প্রয়োগ, সেচ পদ্ধতি ও ফলন

জমি প্রস্তুতির সময় হেক্টর প্রতি ৫০ কেজি ইউরিয়া, ৭০ কেজি টিএসপি ও এমপি সার ৩০ কেজি ছিটিয়ে দিতে হবে। জার্মান ঘাসের কাটিং লাগানোর এক মাস পর হেক্টর প্রতি ৫০ কেটি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে। এই ঘাসে সেচ কম লাগে। গ্রীষ্মকালে ১০-১৫ দিন পর পর সেচ দিতে হয়।

জার্মান জাতের ঘাসের ফলন ও সুবিধা দুটোই বেশি। এটি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এই ঘাসের বাৎসরিক উৎপাদন হেক্টর প্রতি ১০০ টন। নেপিয়ার এর তুলনায় ফলন কম হলেও জার্মান ঘাসের রয়েছে বাড়তি কিছু বিশেস সুবিধা।

এটি প্রথম বছর ৬-৮ বার কাটা যায়। পরবর্তি বছর গুলোতে ৮-১০ বার কাটা যায়। ঘাস কাটার নিয়ম হলো ২-৪ ইন্চি উঁচু করে জমি থেকে কাটতে হবে। যাতে এখান থেকে আবার শাখা বের হতে পারে।

সাবধানতা

জার্মান জাতের ঘাসে নাইট্রোজেনের উপস্থিতি বেশি থাকে তাই ঘাস হালকা রোদে ১ ঘন্টা শুকিয়ে ঘাওয়াতে হবে। সেচ ও সার প্রয়োগের ৭ দিন পর পর্যন্ত গবাদিপশুকে এই ঘাস খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন। কেননা এসময় নাইট্রোজেন অনেক বেশি থাকে। এসময় খাওয়াতে হরে ঘাসকে রোদে ভালো করে শুকিয়ে তারপর খাওয়ানো যেতে পারে।

আরো পড়ুন- নেপিয়ার ঘাস চাষ পদ্ধতি ও পুষ্টিগুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *