গরুর রক্ত প্রস্রাব বা ব্যাবেসিওসিস রোগ আঠালী বাহিত একটি প্রোটোজোয়াজনিত রোগ। গরুর রক্ত প্রস্রাব বা ব্যাবেসিওসিস রোগের আর একটি নাম হলো রেড ওয়াটার ফিভার। কারণ এরোগ হলে রক্তের লোহিত কনিকা ভেঙ্গে যাওয়ায় মূত্রের রং লাল হয়। গরুতে রক্ত শুন্যতা দেখা দেয়। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করা সহজ না হওয়ায় এ রোগের ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়।
রোগ পরিচিতি
রোগের নাম | গরুর রক্ত প্রস্রাব বা ব্যাবেসিওসিস (Bovine babesiosis) |
রোগের ধরণ | গবাদি পশুর পরজীবী ঘটিত রোগ |
জীবাণুর নাম | Babesia bovis and Babesia bigemina. |
সংক্রমণ | গরু, মহিস, |
মৃত্যুর হার | কম |
সংক্রমণের বয়স | ৯ মাস পড় |
চিকিৎসা | চিকিৎসায় রোগ ভালো হয়। |
রোগের কারণ
ব্যাবেসিয়া বোভিস ও ব্যাবেসিয়া বাইজেমিনা (Babesia bovis and Babesia bigemina) নামক প্রোটেজোয়া যা আঠালীর মাধ্যমে গবাদিপশুতে ছড়ায়। সাধারণত ৯ মাস বয়স পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত হয় না বলে জানা গেছে।
গরুর রক্ত প্রস্রাব রোগের লক্ষণ
- শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকে। ১০৩ থেকে ১০৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট হয়।
- গরু খাওয়া কমিয়ে দেয় ও ঝিমানো ভাব দেখা যায়।
- গরু হাটাচলা কম করে।
- আক্রান্ত পশুর মূত্রের রং দেখতে দুধ ছাড়া চা বা কফির মত হয়।
- এ সময় গরুর রক্ত প্রস্রাব, পাতলা পায়খানা, কোষ্ঠকাঠিন্য, প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।
- গরুর প্রচন্ড রক্ত স্বল্পতা দেখা দেয় ফলে দেখতে ফ্যাকাসে হয়ে যায়।
- শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃদস্পন্দনের হার বেড়ে যায়।
- আক্রান্ত গাভীর গর্ভপাত হতে পারে।
প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
গরুর শরীরের আঠালী নিয়ন্ত্রন করে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়। বর্ষার শুরু ও শেষে আঠালীনাশক ঔষধ প্রয়োগ করলে গরুর রক্ত প্রস্রাব বা ব্যাবেসিওসিস রোগের প্রদুর্ভাব নিয়ন্ত্রন করা যায়।
- ইমিডোর্কাব ডাইপ্রোপিয়োনেট ত্বকের নীচে একবার ইনজেকশনই কার্যকর।
- হিমাটিনিক মিক্সার যেমন- হিমাফিল সল্যুশন (SK+F) সেবন করানো উচিৎ।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নিয়মিত টিএমবি ভেট বোলাস খাওয়ানো যেতে পারে।
- কখনো কখনো অ্যালাম ও বোরিক এসিড একত্রে মিশিয়ে খাওয়ালে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
গরুর রক্ত প্রস্রাব বা ব্যাবেসিওসিস রোগ সম্পর্কে আরো জানতে নিচের পিডিএফ বই টি পড়তে পারেন-