হাঁসের ডাক প্লেগ রোগ, লক্ষণ ও চিকিৎসা। হাঁস রোগে আক্রান্ত সাধারণত মুরগির চেয়ে কমই হয়ে থাকে। হাঁসের ডাক প্লেগ রোগ ও ডাক কলেরা রোগ অন্যতম। এই দুটি রোগই ভাইরাস ঘটিত রোগ। এই রোগে হাঁসের মর্টালিটি অনেক বেশি। সুষ্ঠ চিকিৎসায় এই রোগ সহজেই ভালো হয়। খামারে এই রোগের প্রাদুর্ভাব অনেক বেশি। হাঁস পালন খামারে এই রোগ দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরামর্শ ক্রমে ঔষধ খাওয়াতে হবে।
হাঁসের ডাক প্লেগ রোগের কারণ
হাঁসের ডাক প্লেগ রোগের অপর নাম ডাক ভাইরাস এন্টারাইটিস। এই রোগ হারপেস (Herpes) গ্রুপের এক প্রকার ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট হাঁসের মারাত্নক প্রকৃতির সংক্রামক রোগ। ১৯২৩ সালে সর্বপ্রথম এ রোগ নেদারল্যান্ডে সনাক্ত হয়।
পরবর্তীকালে ফ্রান্স, জার্মানী, আমেরিকা, ভারত, বাংলাদেশ এবং পৃথিবীর আরো বহু দেশে এ রোগ সনাত্ত করা হয়েছে।
১৯৬৩ এবং ১৯৬৫ সালে ভারতবর্ষে এ রোগের প্রার্দুভাব ঘটে এবং বহুসংখ্যক হাঁস মারা যায়। এখনো প্রতি বছর অনেক হাঁস এই রোগে মারা যায়।

ডাক প্লেগ রোগের ৮টি লক্ষণ
হাঁসের ডাক প্লেগ হলে নিম্নোক্ত ৮ টি লক্ষণ সহ আরো কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। তবে এই ৮ টি লক্ষণ কে বিচনায় রাখলে সহজেই রোগ টি সনাক্ত করা যায়।
- হাঁস দাঁড়াতে পারে না। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটে।
- সাঁতার কাটতে চায় না, পা অবশ হয়ে যায়।
- পানির পিপাসা বেড়ে যায়; কিন্তু খাওয়া দাওয়া কমে যায়।
- পালক এলোমেলো হয় এবং হাঁস পাখনার উপর ভর করে ঝিমাই।
- পায়খানা পাতলা হয়। অনেকসময় পায়খানা সবুজ ও হলুদ রংয়ের হয়ে থাকে। অনেক সময় পায়খানার সাথে রক্ত মিশ্রিত থাকে।
- রোগের প্রকোপ বেশি হলে অনেক সময় পুরুষ হাঁসের প্রজনন অঙ্গ বেরিয়ে আসে।
- ময়নাতদন্ত করলে হাঁসের হৃদপিণ্ড, কলিজা এবং ডিম্বথলিতে জমাটবাঁধা রক্ত পাওয়া যায়।
- অনেক সময় চোখ দিয়ে পানি পড়ে।
ডাক প্লেগ রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি
হাঁসের ডাক প্লেগ রোগ, হাঁসের সংখ্যা কম হলে বা পারিবারিক হাঁসের খামার হলে অক্সিটেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের যেমন রেনামাইসিন ট্যাবলেট বা পাওডার ডোজ অনুযায়ী ৩-৫ দিন খাওয়াতে হবে।
হাঁসের সংখ্যা বেশি হলে বা বানিজ্যক হাঁসের খামার হলে অবশ্যই উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের দায়িত্বরত ভেটেরিনারি সার্জন অথবা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসারের পরামর্শ মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
হাঁসের এই রোগ হলে দুই বা তার অধিক ঔষধ খাওয়ানোর প্রয়োন পড়ে।

হাঁসের ডাক প্লেগ রোগ প্রতিরোধের উপায়
ডাক প্লেগ রোগ প্রতিরোধ করতে ৩ সপ্তাহ বয়সের হাঁসের বাচ্চাকে ১ম টিকা দিতে হয়। ৬ মাস পর্যন্ত এ টিকার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় থাকে। তাই ৬ মাস পর পর এই টিকা দিতে হয়। খামারে রোগ দেখা দিলে সুস্থ হাঁসগুলিকে আলাদা করে এ টিকা দিতে হয়। খামারের জৌব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। হাঁসকে সবসময় পরিষ্কার পানি পান করতে দিতে হবে।
আরো পড়ুন- ডাক ফিড (গ্রোয়ার) ফরমুলেশন-1
বাচ্চা বাইরে ফেরিওয়ালার কাছে নিয়ে পরের দিন থেকে মারা যাচ্ছে। এর প্রতিকার কি
বিশ্বস্ত হ্যাচারি থেকে বাচ্চা নিতে হবে।
(বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে হাঁস পালন বহুগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সঠিক নিয়মে হাঁস পালন করার জন্য পর্যাপ্ত ঔষধ, খাদ্য, ভ্যাকসিন, উন্নত মানের বাচ্চা ইত্যাদির প্রচুর অভাব রয়েছে। হাঁসের বাচ্চারীতে বাচ্চার জাত উন্নয়ন নিয়ে তো চিন্তা করা হয়ই না বরং রোগ জীবাণুর সংক্রমন সহ নানা ধরণের অনিয়মের পরই বাচ্চা খামারীর হাছে পৌছায়। আমাদের দেশের হাঁসের খামার গুলোকে এসহল হ্যাচারীগুলো ধ্বংশ করে চলেছে।)
করনীয়-
একজন রেজিঃ ভ্যাটেরিনারী ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নেওয়া-
একজন খামারী হিসাবে নিচের ঔষধ গুলো ব্যবহারে আমার হাঁস ভালো হয়ে গেছে।
* খামারে জীবাণুনাশক স্প্রে করুণ।
* Viru stop এই ঔষধটি পাওয়া গেলে ১ মিলি ১ লিটার পানিতে ৭২ ঘন্টা খাওয়ান।
* সাথে Sefa 1 (Popular Farma.) ১ মিলি ১ লিটার পানিতে ৭২ ঘন্টা খাওয়ান।
* সাথে লিভার টনিক Liva Vet ১ মিলি ২ লিটার পানিতে খাওয়ান।
* পানিতে স্যালাইন দিন।
আমাদের রাজ হাসেঁর বাচ্চা মরে যাচ্ছে,,,মাথা ঘুরে ঘুরে পরে যাচ্ছে।আমরা এখন কি করবো?কি ওষুধ খাওয়াবো?
ডাক প্লেগ রোগ কেন হয়?
ভাইরাস থেকে হয়। যে ভাইরাসের উপস্থিতি বাংলাদেশে আছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে মারা যাওয়া হাঁস নিয়ে যান।