মুরগির ব্রুডার নিউমোনিয়া বা অ্যাসপারজিলোসিস রোগ (Aspergillosis) রোগ। Aspergillosis fumigatus নামক এক প্রকার ছত্রাক থেকে মোরগ মুরগি তে এই রোগ ছড়ায়। সাধারণত কম বয়সি মুরগি এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ রোগের জীবাণু মূলত মুরগির শ্বাসতন্ত্র কে আক্রান্ত করে।
যেহেতু এই রোগ ব্রুডারে বাচ্চা পালন সময়ে বেশি হয়ে থাকে বলে এ রোগকে ব্রুডার নিউমোনিয়া বলা হয়ে থাকে। সাধারণত যেসব মুরগির খামারে স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থাপনা ভালোভাবে মেনে চলে না সেসব খামারে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়ে থাকে।
সংক্ষিপ্ত রোগ পরিচিতি
রোগের নাম | অ্যাসপারজিলোসিস (Aspergillosis) |
রোগের ধরণ | মুরগির ছত্রাক জনিত রোগ |
জীবাণুর নাম | Aspergillosis fumigatus |
সংক্রমণ | পোল্ট্রি |
মৃত্যুর হার | বাচ্চাতে মৃত্যুর হার বেশি। |
সংক্রমন সময় | যেকোন বয়সে। |
চিকিৎসা | চিকিৎসায় রোগ সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়। |

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম
- মুরগির খাদ্য ছত্রাক জমলে এবং লিটার এর মাধ্যমে বংশবিস্তার করে ও স্পোর তৈরি করে। ঐসব স্পোর শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মুরগির দেহে প্রবেশ করে এবং রোগের সৃষ্টি করে।
- ইনকিউবেটর ও বাচ্চা বহন করার বাক্স সংক্রমিত হলে রোগ বিস্তার হয়ে থাকে।
- যদি তিলের খৈল পুরানো হয়ে থাকে এবং সাদা হয়ে যায় তবে তার মাধ্যমে মুরগির ব্রুডার নিউমোনিয়া রোগ সবচেয়ে বেশি ছড়ায়।
মুরগির ব্রুডার নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ
- শ্বাসতন্ত্র আক্রমণের ফলে হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট বাচ্চাগুলো দাড়ানো অবস্থায় মাথা উপরের দিকে হা করে দ্রুত শ্বাস প্রশ্বাস নিতে থাকে। যাকে পাম্প হ্যান্ডেল ব্রিদিং বলা হয়।
- খাদ্য খাওয়া বন্ধ করে দেয়।
- খুব দ্রুত অসুস্থ থেকে সুস্থ বাচ্চায় রোগ বিস্তার লাভ করে।
- বাচ্চাগুলো চুপচাপ বসে থাকে এবং অস্বাভাবিক পিপাসায় অতিরিক্ত পানি খেয়ে থাকে।
- ফুসফুস নষ্ট হয়ে যায় এবং এয়ার স্যাক ও ফুসফুসে ছোট ছোট সাদা রঙের দানা দেখা যায়।
মুরগির ব্রুডার নিউমোনিয়ার চিকিৎসা
মুরগির ব্রুডার নিউমোনিয়া রোগ হলে চিকিৎসায় তেমন কোনো ফল পাওয়া যায় না। কপার সালফেট বা তুঁতে প্রতি লিটার পানির সাথে 0.5 গ্রাম প্রয়োগ করে তিন থেকে পাঁচ দিন চিকিৎসা প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।
অন্যসব জটিলতায় না ভোগার জন্য এন্টিবায়োটিক ও সালফোনেমাইড জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করা যেতে পারে। অসুস্থ পাখিগুলো সরিয়ে ফেলে ধ্বংস করে ফেলা উচিত।
রোগ যাতে না হয় সে জন্য মুরগির বাচ্চার ঘর, ঘরের আসবাবপত্র ও মেঝে নিয়মিত জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত।
রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা
হ্যাচারি রুম ও ইনকিউবেটর সর্বদা জীবানুনাশক দিয়ে ধৌত করা উচিত। লিটার যাতে স্যাঁতস্যাতে না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। খাদ্যে যাতে এ ধরনের ছত্রাকের আবাসস্থল তৈরি না হতে পারে তার ব্যবস্থা নিতে হবে এবং সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। মুরগির বাচ্চাতে রোগ দেখার প্রাথমিক অবস্থায় খাদ্য পরীক্ষা করতে হবে যদি ওই খাদ্যে ফাঙ্গাস থাকে তবে অবশ্যই ওই খাদ্য বদলে দিতে হবে।
আরো পড়ুন- মুরগির ঠান্ডা বা মাইকোপ্লাজমোসিস রোগ