বোভাইন এফিমেরাল ফিভার গবাদিপশুর একটি ভাইরাস জনিত সংক্রামক রোগ। বোভাইন এফিমেরাল ফিভার আকস্মিক হয় এবং তিন দিন স্থায়ী থাকে বলে এ রোগকে তিন দিনের জ্বর বা থ্রি ডেজ সিকনেস বলে। এ রোগে আক্রান্তের হার ৫-১০০% এবং মৃত্যুর হার ২%। রক্ত শোষক কীট-পতঙ্গ আক্রান্ত প্রাণী হতে সুস্থ পাণিতে ভাইরাস ছড়ায়। প্রধানত মশা, ডাঁশ, মাছি প্রভৃতি এই ভাইরাস বহন ও সংক্রমন ঘটায়।
রোগ পরিচিতি
রোগের নাম | বোভাইন এফিমেরাল ফিভার (Bovine Ephemeral Fever) |
রোগের ধরণ | ভাইরাস জনিত সংক্রামক রোগ |
জীবাণুর নাম | Bovine Ephemeral Fever Virus |
সংক্রমণ | গরু ও মহিষ |
মৃত্যুর হার | খুব কম |
সংক্রমণের বয়স | যেকোন |
চিকিৎসা | চিকিৎসায় প্রাণি ১০০ ভাগই সুস্থ্য হয়। |

রোগের কারণ
Rhabdoviridae গোত্র ভুক্ত Vesiculovirus জেনাসের Bovine Ephemeral Fever Virus বা বোভাইন এফিমেরাল ফিভার ভাইরাস এই রোগের কারণ। এই রোগ গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপ-গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে এবং গরু ও মহিষের পালন যে অঞ্চলে বেশি সেখানে মহামারি আকারে সংক্রমিত হতে দেখা যায়।
বোভাইন এফিমেরাল ফিভার রোগের লক্ষণ
- আক্রান্ত পশুর ক্ষুধামন্দা ও কাঁপুনি সহ প্রচন্ড জ্বর দেখা যায়।
- তাপমাত্রা ১০৫ – ১০৭ ডিগ্রী ফারেনহাইট থাকে।
- নাক, মুখ ও চোখ দিয়ে তরল পদার্থ পড়তে দেখা যায়।
- পরবর্তীতে দেহের বিভিন্ন অস্থিসন্ধির স্থানে ব্যাথা হয় ফলে গরু খুড়িয়ে হাটে।
- আক্রান্ত গরু হাপাতে থাকে।

রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
এটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ হওয়ায় এর সুনির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নাই । তিন দিনের মধ্যে আপনা আপনি এরোগ ভালো হয়ে যায়।
- যেহেতু জ্বর থাকে সেহেতু জ্বর ও ব্যাথানাশক ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে।
- ডেক্সামিথাসন গ্রুপের ঔষধ ব্যবহার করা যেতে পারে।
- বেনজাইল পেনিসিলিন গ্রুপের এন্টিবায়টিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
- রোগ প্রতিরোধ হিসাবে পরুকে সবসময় বহিপরজিবী মুক্ত রাখতে হবে।
আমাদের দেশে এই রোগটি প্রচুর দেখা যায়। এই রোগকে তিন দিনের জ্বর বা থ্রি ডেজ সিকনেস বলা হয়। কিন্তু এই রোগের লক্ষণ এমন যে গ্রামের সাধারণ খামারি গরুর উচ্চ তাপমাত্রা ও শ্বাসকষ্ট দেখে পল্লি পশুচিকিৎসকের সরনাপন্য হন। এতে প্রাণি চিকিৎসক খুব সাধারণ কিছু ঔষধ ব্যবহার করে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা বিল নিয়ে থাকে। অথচ যত্ন নিলে তিন দিনে এই রোগ ভালো হয়ে যায়।
আরো পড়ুন: গরুর বাদলা রোগ (Black Quarter) সম্পর্কে।