গরুর দাঁত ও বয়সের সম্পর্ক

গরুর দাঁত ও বয়সের সম্পর্ক

গরুর দাঁত ও বয়স। প্রিয় খামারি, গরুর খামারিদের অবশ্যই গরুর দাঁত সম্পর্কে ভালো ধারনা থাকতে হবে। গরুর দাত দেখে গরুর বয়স জানা যায়। এটি আদি কাল থেকে প্রচলিত বয়স নির্ণয় পদ্ধতি এবং সঠিক পদ্ধতি। গরুর দাঁত ভাংগার সাথে এর বৃদ্ধি সহ সকল কার্যকলাপ নির্ভর করে।

গরুর দাঁত

গরুর বয়স জানার সবচাইতে ভালো উপায় হল গরুর দাঁত পর্যবেক্ষণ করা। গরুর দাঁতের সংখ্যা এবং সেই দাঁতের ক্ষয়ের পরিমাণ দেখে নির্ণয় করা যায় তার বয়স। আমাদের যেমন দুধ দাঁত রয়েছে তেমন অস্থায়ী দাঁত গরুরও রয়েছে।

স্থায়ী দাঁতের থেকে এগুলোকে সহজেই আলাদা করা যায় কারণ এগুলো আকারে ছোট এবং তুলনামুলকভাবে বেশি সাদা। একটা পূর্ণবয়স্ক গরুর মুখের ভেতরে ৩২ টা দাঁত থাকে। নিচের পাটিতে সামনের দাঁত বা কর্তন দন্ত থাকে ৮ টা। ওপরের পাটিতে সামনে কোনও দাঁত থাকে না।

শুধু মাড়ির শক্ত অংশ থাকে যাকে বলে ডেন্টাল প্যাড। আর উভয় পাটির ভেতরের দিকে থাকে ছয়টা মোলার আর ছয়টা প্রিমোলার দাঁত যেগুলো চিবানোর জন্য ব্যবহার হয়।

০-১ মাস বয়সে দাঁত

জন্ম থেকে এক মাস বয়সের মাঝে অস্থায়ী দাঁত উঠতে শুরু করে। এক মাসের মধ্যে নিচের পাটির সামনের আটটা অস্থায়ী দাঁত উঠে যায়। এগুলো ছোট ও দুর্বল প্রকৃতির হয়ে থাকে।

এক বছর বয়সের দাঁত

এক বছর বয়সে সামনের মাঝের দুটো অস্থায়ী দাঁত পড়ে যায় ও সেখানে স্থায়ী দুটো দাঁত ওঠে যেগুলো আকারে পাশের দাঁতগুলোর থেকে বড়। এসময় থেকে গরু আরো বেশি খেতে আগ্রহি হয় ও FCR বাড়ে।

গরুর দাঁত
গরুর দাঁত

দুই বছর বয়সের দাঁত

দুই বছর বয়সের মাঝে এই দুটো দাঁত বেশ বড় আকার ধারণ করে। দুই বছর থেকে আড়াই বছরের মাঝে সামনের দুইটা দাঁতের দুই পাশে আরও একটা করে স্থায়ী দাঁত ওঠে ফলে সামনে স্থায়ী দাঁতের সংখ্যা হয় চারটা। তিন বছরের মাঝে এই পাশের দুইটা দাঁতও সম্পূর্ণ আকৃতি ধারণ করে। আর এই সময় টি হলো একটি গরুর সর্বচ্চো উৎপাদন সময়।

তিন বছর বয়সে দাঁত

তিন বছরের মাঝে পাশে আরও দুইটা দাঁত ওঠে ফলে সামনে স্থায়ী দাঁতের সংখ্যা হয় ছয়টা। সাড়ে তিন বছরের মাঝে এই দুটা পূর্ণ আকৃতি ধারণ করে।

চার থেকে পাঁচ বছর বয়সের দাঁত

চার থেকে পাঁচ বছরের মাঝে সামনে আটটা স্থায়ী দাঁতই উঠে যায়।

পাঁচ থেকে ছয় বছরের দাঁত

পাঁচ থেকে ছয় বছর বয়সে একেবারে সামনের দুটো দাঁত ক্ষয় হতে হতে সমান হয়ে যায় এবং পাশের বাকি দাঁতগুলোতেও ক্ষয়ের চিহ্ন দেখা যায়।

আসাকরি এবার আর গরুর বয়স চিনতে ভুল করবেন না। কেননা দুই বছর বয়সের নিচে গরু কিনলে আপনার কোরবানি হবে না আর বেশি বুড়ো গরু কিনলে তার মাংস খাওয়া যাবে না! তাই দাঁত দেখে নিশ্চিত হয়ে গরু কিনুন। আর খামারিদের কে আরো জানতে হবে কেননা গরুর হাটে বা ব্যপারিরা কখনোই সত্যি কথা বলে না।

আরো পড়ুন- গরুর কৃমি ও কৃমিনাশক ঔষধ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *