গবাদি প্রাণির তড়কা/ এনথ্রাক্স রোগ মারাত্বক ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ। বাংলাদেশে এনথ্রাক্স রোগ তড়কা নামেই বেশি পরিচিত। গবাদিপশুর এই রোগটি একটি অন্যতম জুনোটিক রোগ। অর্থাৎ মানুষও এনথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়। গরু-ছাগলে এই রোগে মৃত্যুর হার অনেক বেশি।
তরকা/ এনথ্রাক্স রোগের কারণ
এনথ্রাক্স/ তরকা রোগ ব্যাসিলাস এনথ্রাসিস (Bacillus Anthracis) নামক গ্রাম পজেটিভ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনে হয়। ছাগল গরুর জন্য মারাত্বক একটি রোগ।
গরুর অ্যানথ্রাক্স রোগের লক্ষণ
ছাগল বা গরু তরকা রোগে আক্রান্ত হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথে গরু লাফাতে লাফাতে মারা যায়। অতি তিব্র সংক্রমনে লক্ষণ প্রকাশের ১-২ ঘন্টার মধ্যে আক্রান্ত প্রাণি মারা যায়। তীব্র সংক্রমণে নিম্নক্ত লক্ষণ প্রকাশ পায়।
- কাপুনি সহ প্রচন্ড জ্বর (১০৫-১০৭ ডিগ্রী ফারেনহায়ট) হয়।
- এই রোগ হলে প্রচন্ড পেশী কম্পন, শ্বাস কষ্ট ও মিউকোসায় রক্ত দেখা যায়।
- সাধারণত আক্রান্তের ১-২ ঘন্টার মধ্যে প্রাণি মারা যায়।
- মৃত প্রাণির নাক, মুখ ও পায়খানার রাস্তায় আলকাতরার মত কালো রক্ত বের হতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে রক্ত জমাট বাধে না।
- প্রচন্ড জ্বর, ক্ষুধা মন্দা, অগভীর ও দ্রুত শ্বাস প্রশ্বাস, হার্টের স্পন্দন বৃদ্ধি, পেট ফুলে যাওয়া, চোখে রক্ত দেখা যাওয়া ও রক্ত মিশ্রিত পায়খানা লক্ষ্য করা যায়।
- দুগ্ধবতী গাভীর ক্ষেত্রে দুধের উৎপাদন অনেকাংশে কমে যায়। গাভীর দুধ হলুদ বর্ণ ধারণ করে।
- গর্ভবতী গাভীর গর্ভপাত ঘটে।

তড়কা রোগ প্রতিরোধ
- এনথ্রাক্স রোগ নিয়ন্ত্রন করার জন্য নিয়মিত টিকা প্রদান (৬ মাস বয়স হতে শুরু করে প্রতি বছর একবার) করতে হবে।
- আক্রান্ত প্রাণি মারা গেলে ভাগারে বা পরিত্যাক্ত জায়গায় না ফেলে অন্তত ৬ ফিট মাটির নিচে চুন ছিটিয়ে পুতে রাখতে হবে।
- মৃত প্রাণির গোয়াল ঘর জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে ও স্প্রে করে জীবাণু মুক্ত করতে হবে।
চিকিৎসা
- গ্রাম পজেটিভ ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে এমন এন্টিবায়টিক যেমন এমক্সিসিলিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
- সেই সাথে জ্বর ও ব্যাথা নাশক ঔষধ ব্যবহার করা যেতে পারে।
আরো পড়ুন: গবাদিপশু পালন বিষয়ক সাধারণ তথ্যাবলী