কাতলা মাছ পরিচিতি ও চাষ পদ্ধতি

কাতলা মাছ

কাতলা মাছ দক্ষিণ এষিয়ার একটি জনপ্রীয় মাছ। কাতলা মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায় ও আকার অনেক বড় হয়। এই মাছ খেতেও খুব সুস্বাদু এবং দেখতেও আলিশান হয়। দেশি কার্প মাছের মধ্যে কাতলা প্রসিদ্ধ।

কাতলা মাছ পরিচিতি

মাছের নাম কাতলা মাছ
মাছের বৈজ্ঞানিক নাম লেবেও ক্যাটলা (Labeo catla)
দৈহিক গঠনমাছ দেখতে কিছুটা মাকু আকৃতির হলেও মাথা বেশ মোটা থাকে।
মাছের মধ্য ভাগ চ্যাপ্টা, মাথা ক্রমেই সরু হয়েছে।
এই মাছের শরীরে ঘন আঁশ দেখতে পাওয়া যায়।
বড় আঁশ গুলো মসৃণ ও সারিবদ্ধ ভাবে সাজান থাকে।
এদের মুখের হা বেশ বড় হয়।
শরীরের উপরের অংশ ধুসর কালো ও নিচের অংশ রূপালি সাদা হয়ে থাকে।
প্রাপ্তি স্থানভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিয়ানমার ও সিংগাপুর সহ দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশে এই মাছ চাষ করা হয়। তবে আমেরিকাতে এই মাছের চাষ শুরু হয়েছে।
জলাশয় নদী-নালা, খাল-বিল, হাওড়-বাওড় ও পুকুরের পানির উপরের স্তরে বসবাস করে।
রোগভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত হয়ে ক্ষতরোগ, পাখনা পচা, ফুলকা পচা, লেজ পচা ইত্যাদি রোগ ও উকুন দ্বারা আক্রান্ত হয়।
খাদ্যএই মাছ পানির উপরের স্তরের খাদ্য খেয়ে থাকে। কাতলের প্রধান প্রাকৃতিক খাদ্য হলো জুপ্লাংটন ও ফাইটোপ্লাংটন। ছোট অবস্থায় জলাশয়ের উপরের স্তরের জুপ্লাংটন খেয়ে থাকে। এই মাছ চাষে ভালো উৎপাদন পেতে জলজ খাবারের সাথে সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ করতে হয়।
উৎপাদনএই মাছ দ্রুত বর্ধণশীল, কম সময়ে বেশি উৎপাদন পাওয়া যায়। দুই বছরে কাতল মাছ ৪ থেকে ৫ কেজি হয়।
প্রজননসাধারণত দুই বছর বয়স হলে এই মাছ প্রজননক্ষম হয়। নদীতে স্রোত থাকলে মাছ কিনারে এসে ডিম ছাড়ে। মে হতে জুন মাসে স্ত্রী মাছকে ডিম ছাড়তে দেখা যায়। হ্যাচারীতে কৃত্রিম ছ্রোত ও হরমোন প্রয়োগ করে প্রজনন করানো হয়।
বাজার দামএই মাছের বাজার মূল্য খুবই ভালো। বাজারে বড় কাতলের ভালো চাহিদা রয়েছে। ৪ থেকে ৫ কেজি ওজনের কাতলা মাছের দাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা প্রতি কেজি।

কাতল মাছের স্বাদ ও পুষ্টি

কাতলা মাছ অত্যান্ত সুস্বাদু একটি দেশি জাতের কার্প মাছ। দুই বছর বয়সী কাতল মাছ যদি আপনি খেয়ে থাকেন তাহলে এর স্বাদ আপনি কখনোই ভুলতে পারবেন না। পুষ্টি দিকথেকেও এই মাছের রয়েছে বাড়তি আকর্ষণ। রুই এর পরের কাতলের অবস্থান।

কাতলা মাছ
পানি৭৩.৭
প্রোটিন১৯.৫
ফ্যাট২.৪
আয়রণ০.৭৬
ক্যালসিয়াম০.৫১
ফসফরাস০.২১
কার্বোহায়ড্রেট
ক্যালোরি১১১

কাতল মাছ চাষ পদ্ধতি

পুকুরে এই মাছ চাষ করা খুবই সহজ। পুকুরের আন্য স্তরের মাছের সাথে মিশ্র পদ্ধতিতে কাতল কাষ করা হয়। যেহেতু এই মাছ উপরের স্তরের খাদ্য খাই সেহেতু জলাশয়ে যাতে শেওলা ও ছোট ছোট পোকা-মাকড় উৎপন্য হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পুকুরে প্রাকৃতিক খাবার কমে গেলে বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজণীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

আরো পড়ুন- কই মাছ পরিচিতি ও চাষ পদ্ধতি