ইপিল ইপিল পাতা- গবাদিপশুর কাঁচা ঘাসের অন্যতম বিকল্প। ইপিল ইপিল গাছের পাতা গরু, ছাগল ও ভেড়ার জন্য উচ্চ মাত্রার প্রোটিন সমৃদ্ধ ঘাস হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এছাড়াও পুষ্টিমানের দিক থেকে এটি কে আলফা আলফা ঘাসের সাথে তুলনা করা হয়। কেননা েএই গাছের পাতা, কান্ড ও নরম ডগায় ২৩% এর বেশি ক্রড প্রোটিন থাকে। এছাড়াও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের পরিমান বেশ ভাল থাকে ।
কেন ইপিল ইপিল
ইপিল ইপিল গাছের পাতা, কান্ড, ডগা ছাগল ও ভেড়ার জন্য খুবই সুস্বাদু একটি খাবার। এটা কাঁচা ও শুকিয়ে রেখে প্রতিদিনের খাবারের সাথে মিশিয়ে পরিবেশন করলে পশুর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। শীত ও বর্ষায় খাদ্য সংকট দেখা দিলে সংরক্ষণ করে রাখা শুকনো এই পাতা বেশি পরিমানে খাওয়ানো যায়। অধিক মাত্রায় প্রোটিন সহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকার কারনে এটা গবাদিপশুর জন্য দানাদার খাদ্যের বিকল্প হিসাবে কাজ করে।
চাষ পদ্ধতি
গবাদিপশুর খাদ্য হিসাবে বর্তমান সময়ে অনেক খামারি ইপিল ইপিল ঘাস চাষ করছে। নিম্নে এই ঘাসের চাষ পদ্ধতি তুলে ধরা হলো-
বীজ বপন পদ্ধতি
মার্চ-এপ্রিল মাসে এ গাছের বীজ বপন করা হয়। সাধারনত বীজ ১.২-১.৫ সে.মি. মাটির নিচে পুতে দিতে হয়। বীজ রোপনের সময় মাটি ভেজা না থাকলে সেচ দিতে হয়। বীজ রোপনের আগে মাটিতে গোবর সার ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। অসমতল ও পরিত্যাক্ত জমিতে এই গাছের চাষ করা যায়।

ইপিল ইপিলের ফলন
গবাদি পশুর খাদ্য হিসাবে জমিতে যদি শুধু ইপিল ইপিল চাষ করা যায়, তাহলে বছরে প্রায় ৫ থেকে ৬ বার পাতা, কান্ড ও ডগা সংগ্রহ করা যায়। এ ঘাস চাষে একাধারে অনেক বছর ফলন পাওয়া যায়। এভাবে চাষ করলে একর প্রতি বছরে ২৪ থেকে ৩২ টন পশু খাদ্য পাওয়া যায়।
পশু খাদ্য হিসাবে ইপিল ইপিলের পুষ্টিগুণ
- ড্রাই মেটার- ২৯.৯%
- ক্রড প্রোটিন- ২৩.৩%
- ক্রড ফাইবার- ১৯.৯%
- ক্যালসিয়াম- ১০.৭ গ্রাম/কেজি
- ফসফরাস- ২.১ গ্রাম/কেজি
- ম্যাগনেশিয়াম- ৩.৯৯ গ্রাম/কেজি
- ম্যাঙ্গানিজ- ৬৫ মিলিগ্রাম/কেজি
- জিংক- ১৩ মিলিগ্রাম/কেজি
- আয়রণ- ২৬১ মিলিগ্রাম/কেজি
- শক্তি- ১৯ মেগাজুল/কেজি
পুষ্টির দিক থেকে ইপিল ইপিল কে আলফা আলফা ঘাসের সাথে তুলনা করা হয়। কাঁচা পাতার ড্রাই মেটার ২৯.৯% এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান ড্রাই মেটার বেসিসে গড়ে ক্রড প্রোটিন ২৩.৩%, ক্রড ফাইবার ১৯.৯% এবং শক্তি কেজিতে ১৯ মেগাজুল যা ভেড়া সহ অন্যান্য পশুর আদর্শ রেশনের জন্য খুবই মানানসই।
অতীব প্রয়োজনীয় মিনারেল ড্রাই মেটার বেসিসে কেজিতে গড়ে ক্যালসিয়াম ১০.৭ গ্রাম, ফসফরাস ২.১ গ্রাম, ম্যাগনেশিয়াম ৩.৯৯ গ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ ৬৫ মিলিগ্রাম, জিংক ১৩ মিলিগ্রাম এবং আয়রণ ২৬১ মিলিগ্রাম। এটি খাওয়ানোর মাধ্যমে পশুর মিনারেল ঘাটতি পূরন করা সম্ভব।
আরো পড়ুন: জাম্বু ঘাসের পুষ্টিগুণ ও চাষ পদ্ধতি